গরম খবর কম: “পাথর ধৌতকরণ প্রকল্প” নাকি শুভংকরের ফাঁকি?
সিলেট ব্যুরো: সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। পাথর চুরি, পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগের মধ্যেই সম্প্রতি এক “গরম খবর কম” আমাদের হাতে এসেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে জানা যায়, সাদা পাথর লুটপাটের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে নাকি অভিনব এক “ধৌতকরণ প্রকল্প” হাতে নেওয়া হয়েছে!
বিশ্বাস হচ্ছে না? হওয়ারই কথা! কারণ আমাদের গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে কিছু হাস্যকর দৃশ্য। দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শ্রমিকরা যেন ঈদকে সামনে রেখে কাপড় ধোয়ার মহোৎসবে নেমেছেন! তবে কাপড় নয়, তাদের বালতি আর গামলায় শোভা পাচ্ছে সাদা পাথর। কারও হাতে আবার ঝর্ণার জল ছিটিয়ে পাথর “ফ্রেশ” করার মতো গুরুদায়িত্ব!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক “ধৌতকরণ কর্মী” (যাকে দেখে পাথর পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলেই মনে হচ্ছিল) ফিসফিস করে জানালেন, “আরে ভাই, এগুলা চুরি না। আমাদের সম্মানিত নেতারা বলছেন, বর্ষার কাদাপানি লেগে পাথরগুলোর আসল সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছিল। তাই আমরা এগুলোকে ধুয়ে-মুছে ঝকঝকে করছি। দেখবেন, কিছুদিন পর এগুলো আবার আগের মতো সাদা হয়ে যাবে!”
তবে স্থানীয় সচেতন মহল এই যুক্তিতে মোটেই ভরসা পাচ্ছেন না। তাদের মতে, “পাথর ধোয়া” একটি লোক দেখানো প্রক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। আসল উদ্দেশ্য হল, রাতের আঁধারে লুট করা পাথর দিনের বেলায় “পরিষ্কার” করার নামে সরিয়ে ফেলা।
এদিকে, উপজেলা সভাপতির সেই ভাইরাল হওয়া উক্তি (“এগুলো চুরি নয়, সাদা পাথরগুলো ধুয়ে শুকাতে দেওয়া হয়েছে”) নিয়ে এখনও হাসির রোল থামেনি। চায়ের দোকানে থেকে শুরু করে ফেসবুকের কমেন্ট বক্সে—সবখানেই এই নিয়ে চলছে রসালো আলোচনা।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, পাথর ধোয়ার নামে আসলে যা চলছে, তা প্রকৃতির সঙ্গে নির্লজ্জ প্রতারণা। তারা অবিলম্বে এই “ধৌতকরণ প্রকল্প” বন্ধ করে আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন।
তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, “ধৌতকরণ” কর্মযজ্ঞ পুরোদমে চলছে। প্রশ্ন একটাই—এই ধোয়া পাথরের ভবিষ্যৎ কী? এগুলো কি সত্যিই আবার ভোলাগঞ্জের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, নাকি কোনও প্রভাবশালী মহলের পকেট ভারী করবে? সময়ই এর উত্তর দেবে। কিন্তু আপাতত, সিলেটের আকাশে বাতাসে শুধু একটাই গুঞ্জন—”ধুইলেই কি আর ময়লা যায়?”
বিশেষ সংবাদদাতা
গরম খবর কম
ঢাকা